আইফেল টাওয়ারের কাহিনী

আইফেল টাওয়ার
ছবি: আইফেল টাওয়ার (Eiffel Tower)

          পৃথিবীর বুকে মানব সৃষ্ট্য সুউচ্চো  নির্মাণশৈলী হল আইফেল টাওয়ার (Eiffel Tower)। এটি পৃথিবীর বুকে ৪০ বছর পর্যন্ত  সব চেয়ে উঁচু স্থাপনা হিসেবে স্বীকৃত ছিল। ১৯৩০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে ক্রাইসলার ভবন তৈরি হলে এটি পৃথিবীর সর্বোচ্চ কাঠামোর মর্যাদা হাড়ায়। 
           আইফেল টাওয়ার (Eiffel Tower) নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৮৮৭ সালে যা শেষ হয় ১৮৮৯ সালে।আইফেল টাওয়ার  নির্মাণ করতে সময় লাগে ২ বছর ২ মাস ৫ দিন প্রায়। ৩০০ শ্রমিক এই নির্মাণ কাজে অংশগ্রহণ করে। আইফেল টাওয়ার প্যারিস শহরে অবস্থিত সুউচ্চো লৌহ কাঠামো যা ফ্রান্সের  সর্বাধিক পরিচিত একটি প্রতীকে পরিণত হয়েছে দিনে দিনে। 
            আইফেল টাওয়ারের নাম করণ করা হয় এর নকশাকারী প্রকৌশলী গুস্তাভো আইফেলের নাম অনুসারে। গুস্তাভো আইফেল  রেলের জন্য সেতুর নকশা প্রণয়ন করতেন। আইফেল টাওয়ার  নির্মাণে তিনি সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান। 
               আইফেল টাওয়ার (Eiffel Tower) তৈরি করা হয়েছিল ফ্রান্স বিপ্লবের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে। এটির মধ্যে ফ্রান্সের শিল্প উৎকর্সের প্রকাশ ঘটে। আইফেল টাওয়ারের উচ্চতা ৩২৪ মিটা
র বা ১০৬৩ ফুট।

আইফেল টাওয়ার (Eiffel Tower)
ছবি: আইফেল টাওয়ার (Eiffel Tower)
 ১৮০৩৮ টি বিভিন্ন আকৃতির লৌহ খন্ড জোড়া দিয়ে এটি তৈরি করা হয়। এই লৌহ খন্ড গুলো জোড়া দিতে প্রায় ২৫ লক্ষ নাট বল্টুর ব্যবহার করা হয়।  আইফেল টাওয়ারের লৌহ আকৃতির অংশের ওজন ৭৩০০ টন।  আইফেল টাওয়ারে মোট তিনটি তলা রয়েছে।  নিচ থেকে  চূড়ায় ওঠার জন্য দুটি মাধ্যম রয়েছে। শিড়ি দিয়ে উঠতে গেলে আপনাকে ১৬৬৫ টি ধাপ অতিক্রম করতে হবে।  পাঁচটি লিফট আছে কিন্তু প্রতিবার ব্যবহারের জন্য খরচ করতে হয় ১৯ ইউরো। যা টাকায় প্রায় ২ হাজার টাকা।  টাওয়ারে প্রথম তলার চারপাশ ঘুড়িয়ে ৭২ জন পন্ডিত ব্যক্তির নাম লেখা আছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো প্রত্যেকটি নামেই ১২ অক্ষর এর বেশি নেই এবং এর মধ্যে কোনো মহিলার নাম নেই।
           ১৮৮৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন এই টাওয়ারটি পরিদর্শন করেন। এই টাওয়ারটি প্রতি বছর ৭ মিলিয়ন লোক ভ্রমণ করে যার ৭৫ শতাংশই বিদেশি। যা এটাকে টাকা দিয়ে সর্বাধিক ভ্রমণ করার স্থাপনায়  পরিণত করেছে। 
         দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্যারিস জার্মানির অধীনস্থ থাকা কালীন ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে ফরাসিরা টাওয়ারের লিফটের তার কেটে ফেলে।  ফলস্বরূপ হিটলারকে পায়ে হেটে চূড়ায় ওঠতে হয়।  তাই এই কথা একসময় ছড়িয়ে পরে যে হিটলার ফ্রান্স জয় করলেও আইফেল টাওয়ার জয় করতে পারেনি। তাই তিনি আইফেল টাওয়ার (Eiffel Tower) ধ্বংসের আদেশ দিয়ে ছিলেন। কিন্তু তা পরবর্তীতে বাস্তবায়ন হয়নি।  
     
আইফেল টাওয়ারটি পাশাপাশি রেডিও ও টিভি সম্প্রচারের কাজে ব্যবহার করা হয়।  বর্তমান রেডিও অ্যানটেনাটি টাওয়ারের শীর্ষে স্থাপন করা হয় ১৯৫৭ সালে। 


ছবি:আইফেল টাওয়ার (Eiffel Tower)

 ১৯৯৯ সালে আইফেল টাওয়ারে প্যারিসের  হাজর বর্ষ উদযাপন করা হয় । 

Comments